Share Market বা Stock Market
শেয়ার বাজার সম্পর্কে জেনে নিন অত্যন্ত সহজভাবে।

আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকেরই শেয়ার বাজার সম্পর্কে যথাযথ ধারণা নাই। এমনকি অনেক শিক্ষিত লোকও এ সম্পর্কে তেমন জ্ঞান রাখে না। অথচ শেয়ার মার্কেট হতে পারে বিনিয়োগের একটি নির্ভরযোগ্য স্থান। তাই সকলের সামনে এই মার্কেট সম্পর্কে অত্যন্ত সহজভাবে তুলে ধরার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। মনোযোগ দিয়ে এই লেখাটি পড়লে আপনি এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ পরিষ্কার একটি ধারণা পাবেন বলে আমি আশা করি। ধারাবাহিকভাবে লেখাটি পড়ুন। কারণ বিষয়গুলো একটির সাথে অন্যটি সম্পর্কিত বিধায় কোনো অংশ বাদ দিলে বুঝতে সমস্যা হতে পারে।
শেয়ার (Share):

একটি কোম্পানির মোট মূলধনকে বলা হয় শেয়ার ক্যাপিটাল (Share Capital)। মোট মূলধন টাকাকে ১০ টাকা বা ১০০ টাকা হিসাবে ভাগ করে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে মোট শেয়ার বলে। একটি শেয়ার একটি কোম্পানির মূলধনের ক্ষুদ্রতম অংশ। যে ব্যক্তি যতটুকু অংশ শেয়ার কিনবেন সে ঐ কোম্পানির ততটুকু অংশের মালিক হবেন।
একটি কোম্পানির ১০০ টি শেয়ার থাকলে কেউ যদি ১০টি শেয়ার ক্রয় করেন তাহলে সে ঐ কোম্পানির ১০ শতাংশের মালিক হবেন।
মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund):

বিশেষভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারকে একত্র করে একক ইউনিট তৈরী করে "সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জের মিউচুয়াল ফান্ড রুলস ২০০১" মোতাবেক যে ফান্ড তৈরী করে তাকে মিউচুয়াল ফান্ড বলে। ১৫/২০ টি কোম্পানির শেয়ার মিউচুয়াল ফান্ডে থাকে বিধায় এতে বিনিয়োগে ঝুঁকি কম। নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য অথবা অল্প টাকা বিনিয়োগকারীদের জন্য মিউচুয়াল ফান্ড খুব ভালো এবং নিরাপদ।
বন্ড (Bond):

বন্ড এক ধরণের ঋণপত্র। দেশীয় বাজার বা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য বন্ড ছাড়া হয়। ইহা স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি দুই ধরণের হতে পারে। বন্ড সরকারি বা বেসরকারি উভয় প্রকার হতে পারে। আমাদের দেশে প্রায় সব বন্ড সরকারি। বন্ডে আয়ের পরিমান ১৫/১৬ শতাংশ হতে পারে। শেয়ারের ডিভিডেন্ড ২.৫ শতাংশ বন্ড মালিকদের দেওয়া হয়।
ডিবেঞ্চার (Debenture):

কোনো কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকার বা স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজের প্রয়োজনে প্রারম্ভিক অর্থ সংকুলানের নিমিত্তে ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে জনগণ থেকে নির্দিষ্ট হরে সুদ প্রদানের করে ঋণপত্রের মাধ্যমে ঋণ দিয়ে থাকে। প্রতি ৬ মাস অন্তর সুদ পরিশোধ করতে হয়। এই ঋণপত্রকে ডিবেঞ্চার বলা হয়। কোম্পানি মেয়াদ শেষে ডিবেঞ্চারের টাকা পরিশোধ করে দেয়। অনেক ডিবেঞ্চারকে শেয়ারে রূপান্তর করার ব্যবস্থা থাকে। শুধুমাত্র লিস্টেড ডিবেঞ্চার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে শেয়ারের মতো বিক্রয় করা যায়। যারা নির্দিষ্ট যায় পেতে চায় এবং ঝুঁকি নিতে চায় না তাদের জন্য ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ উত্তম।
সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি):
Securities and Exchange Commission (SEC):

সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা SEC হচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। SEC একটি বোর্ড অব গভর্নস দ্বারা পরিচালিত। SEC এর প্রধানকে বলা হয় চেয়ারম্যান। পুঁজি বাজারের যাবতীয় আইন-কানুন, প্রয়োগ ও তদারকির দায়িত্ব SEC এর উপর প্রদান করা হয়েছে। SEC এর অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিম্নলিখিত গুলো অন্যতম:
স্টক এক্সচেঞ্জ (Stock Exchange)
সিডিবিএল এবং ব্রোকার ফার্মস (CDBL and Broker Firms)
মার্চেন্ট ব্যাংক (Merchant Bank)
এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (Asset Management Companies)
স্টক এক্সচেঞ্জ (Stock Exchange):
শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, ডিবেঞ্চার, সরকারি বন্ড, প্রাইভেট বন্ড ইত্যাদি ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমই হলো স্টক এক্সচেঞ্জ। স্টক এক্সচেঞ্জ একটি অলাভজনক এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। ইহা সরাসরি জনগণের নিকট কোনো শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করে না। শেয়ার ক্রয় বিক্রয় সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা SEC এর থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত "ব্রোকার ফার্ম" এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।
স্টক এক্সচেঞ্জ এর আয়ের উৎস:
লিস্টিং ফিস এবং
স্টক এক্সচেঞ্জ এর মাধ্যমে ক্রয় বিক্রয়ের উপর কমিশন।
স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্রধান কাজ:
১। ইস্যুয়ার বা তালিকাভুক্ত কোম্পানির উপর নজর রাখা।
২। ব্রোকার ফার্ম গুলো নিয়ন্ত্রণ করা এবং
৩। তড়িৎ গতিতে ট্রেডের সেটেলমেন্ট করা।
স্টক এক্সচেঞ্জ সমূহ:
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE)
সিডিবিএল বা সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিঃ:
Central Dipository of Bangladesh Limited (CDBL):

সিডিবিএল হচ্ছে, কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর অধীনে নিবন্ধনকৃত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর কর্মকান্ড শুরু হয় ২০০৪ সালে। এর কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত। কোনো একক ব্যক্তি সিডিবিএল এর মালিক নন। স্টক এক্সচেঞ্জ, কয়েকটি ব্যাংক, আইসিবি, কয়েকটি বড় কোম্পানি এর মালিক। এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা CEO (Chief Executive Officer) থাকে।
সিডিবিএল এর কাজ:
ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, ডিবেঞ্চার, ইত্যাদি মালিকানার হিসাব সংরক্ষণ ও ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে মালিকানা পরিবর্তনের তাৎক্ষণিক হিসাব রাখা। কোম্পানির শেয়ার বিভাগ আগে যে কাজ করতো সিডিবিএল সেই কাজটাই এখন ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে করে।
আইপিও:
IPO (Initial Public Offering):

আমাদের দেশে সাধারণত উদ্যোক্তাগণ নিজেদের পুঁজি এবং ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করেন। পরবর্তীতে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ব্যাংক লোনে না গিয়ে সাধারণ জনগণের নিকট আংশিক মালিকানা বিক্রয় করেন। কোনো কোম্পানি তার আংশিক মালিকানা বিক্রয়ের জন্য জনগণের নিকট প্রাথমিক যে প্রস্তাব দিয়ে থাকে তাকে আইপিও বলে। ইহাকে প্রাইমারি মার্কেট নামেও অভিহিত করা হয়। অন্য ভাবে বলা যায়, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইচ্ছুক জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রি করে তাকে আইপিও (IPO) বলে। আমাদের দেশে আইপিওতে বিনিয়োগে তুলনামূলকভাবে ঝুঁকি কম।
আইপিও সম্পর্কে যেকোনো ধরণের তথ্য www.dsebd.org এই website এ পাওয়া যাবে।
কোনো কোম্পানির আইপিওতে আসার প্রক্রিয়া:
আইপিওতে আসতে হলে কোনো কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালককে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা SEC এর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন নিতে হলে কোম্পানির যাবতীয় হিসাবসহ বিশেষভাবে লাইসেন্স প্রাপ্ত মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে SEC তে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সাথে Prospectus দিতে হবে। Audit Firm দ্বারা Certified হিসাব বিবরণী, উদ্যোক্তাদের প্রোফাইল, IPO এর টাকা কি কাজে ব্যবহার করা হবে, ভবিষ্যতে মুনাফার সম্ভাব্য হার, Stock Exchange এ তালিকাভুক্তির ঘোষণা ইত্যাদি তথ্যসহ Prospectus (১০০ থেকে ১৫০ পৃষ্ঠার) জমা দিতে হবে। Prospectus যে শর্তে অনুমোদন হবে, ঠিক সেভাবে IPO এর জন্য দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে ঘোষণা দিতে হবে। IPO এর শর্ত ভঙ্গ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
IPO তে শেয়ার পাওয়ার পদ্ধতিঃ

কোনো কোম্পানির শেয়ার বাজারে এলে www.dsebd.org এবং www.cse.com.bd এই website এ, ব্রোকার ফার্মে, দৈনিক পত্রিকায় অথবা উক্ত কোম্পানির website থেকে তথ্য পাওয়া যাবে। Prospectus এ প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে নির্দিষ্ট ব্যাংকের শাখায় আইপিও'র টাকা জমা দিতে হবে। কোম্পানির অফারকৃত শেয়ারের সংখ্যা থেকে আবেদন বেশি হলে তা ৬০ দিনের মধ্যে লটারির মাধ্যমে বরাদ্ধ দেয়া হয়। লটারির ফলাফল কোম্পানির website এ দেয়া হয়। লটারি হওয়ার দু-তিন ঘন্টার মধ্যে আবেদনকারী লটারির ফলাফল জানতে পারবেন। শেয়ার বরাদ্ধ পেলে তা সিডিবিএল' এ আবেদনকারীর বি.ও একাউন্টে জমা হয়ে যায়। ব্রোকার ফার্মে যোগাযোগ করে বরাদ্ধকৃত শেয়ার সিডিবিএল' এ জমা হয়েছে কিনা তা জানা যায়। বরাদ্ধ না পেলে টাকা রিফান্ড ওয়ারেন্টের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়। বর্তমানে অনলাইন ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি টাকা চলে আসে।
আইপিও'তে আবেদন করলে কতদিন পর শেয়ার পাওয়া যায় এবং শেয়ার না পেলে কতদিন পর টাকা ফেরত পাওয়া যায়:
আইপিও'তে আবেদনের শেষ তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বরাদ্ধ পত্র (Allotment Letter) অথবা টাকা ফেরত দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইপিওর তারিখ শেষ হওয়ার ৬০/৭০ দিনের মধ্যে শেয়ার বিনিয়োগকারীর বি.ও একাউন্টে আসে। বি.ও একাউন্টে আসার ৫/৭ দিনের মধ্যে শেয়ার বিক্রয় করা যায়।
শেয়ার না পেলে আবেদনের সাথে জমা দেয়া টাকা (রিফান্ড ওয়ারেন্ট) কুরিয়ারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীর নিকট পাঠানো হয়। তবে বর্তমানে অনলাইন ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি টাকা চলে আসে।
ফেইস ভ্যালু:
Face Value (FV):

কোনো কোম্পানির শেয়ারের একক মূল্যকে (Unit Price) ফেইস ভ্যালু বলা হয়। ফেইস ভ্যালু সাধারণত ১০ টাকা অথবা ১০০ টাকা হয়ে থাকে। সুতরাং "ফেইস ভ্যালু" যদি ১০ টাকা হয়ে থাকে তার মানে হচ্ছে একটি শেয়ারের মূল্য ১০ টাকা। কেউ যদি ১০ "ফেইস ভ্যালু" এর ৫০০ টি শেয়ার ক্রয় করে তাহলে তাকে (৫০০X১০=৫০০০) ৫০০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
শেয়ার প্রিমিয়াম:
Share Premium:

কোনো একটি শেয়ারের "ফেইস ভ্যালু" যদি ১০০ টাকা হয় এবং কোম্পানি আইপিও ছাড়ার সময় যদি ১৫০ টাকা নিয়ে থাকে তাহলে অতিরিক্ত ৫০ টাকাকে প্রিমিয়াম বলা হয়। এক্ষেত্রে ৫০ টি শেয়ার ক্রয় করলে তাকে দিতে হবে ৭,৫০০ টাকা। কিন্তু কোম্পানি তাকে শেয়ার সার্টিফিকেট দিবে ৫ হাজার টাকার। অতিরিক্ত টাকা কোম্পানির হিসাবে আলাদা করে শেয়ার প্রিমিয়াম হিসাবে থেকে যাবে। কোম্পানি ইচ্ছা করলে পরবর্তীতে শেয়ার প্রিমিয়ামের টাকা ডিভিডেন্ড হিসাবে ফেরত দিতে পারবে। কোনো ইস্যুয়ার (কোম্পানি) চাইলেই প্রিমিয়াম নিতে পারবে না। তাকে প্রিমিয়াম জাস্টিফাই করতে হবে। সাধারণত প্রিমিয়ামে ইস্যুকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
বি.ও একাউন্ট:
B.O Account (Beneficiary Owner Account):

ব্যাংকে টাকা জমা রাখার জন্য যেমন ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হয় তেমনি শেয়ার বাজারে ব্যবসা করার "ব্রোকার ফার্ম" গুলোতে একাউন্ট খুলতে হয়। "ব্রোকার ফার্ম" এর এই একাউন্ট গুলোকে "বি.ও একাউন্ট" বলা হয়। B.O Account হচ্ছে শেয়ার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য রাখার খতিয়ান। ব্যাংক একাউন্ট যেকোনো ব্যাংকে খোলা যায় কিন্তু BO Account শুধুমাত্র CDBL (Central Depository of Bangladesh Ltd) এর মনোনীত "ব্রোকার ফার্ম" গুলোর মাধ্যমে খুলতে হয়। CDBL বি.ও একাউন্ট নম্বর দিয়ে থাকে। যে সকল "ব্রোকার ফার্ম" বি.ও একাউন্টের আবেদন গ্রহণ করতে পারে তদেরকে CDBL এর ভাষায় D.P (Depository Participant) বলে। একজন ব্যক্তি নিজ নামে একটি মাত্র বি.ও একাউন্ট খুলতে পারে। এছাড়া অন্য একজনের সাথে একত্রে একটি Joint Account খুলতে পারে।
বি.ও একাউন্ট খুলতে যেসকল কাগজপত্র প্রয়োজন:
১। একাউন্টধারীর ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
২। নমিনির ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
৩। জাতীয়তার সনদপত্র অথবা পাসপোর্টের প্রথম চার পাতার ফটোকপি ও
৪। ব্যাংক সনদ।
আবেদনকারী কর্তৃক জমা দেওয়া ছবির পিছনে তার স্বাক্ষর থাকতে হবে। ব্যাংক একাউন্ট এবং বি.ও একাউন্ট উভয় একাউন্টে স্বাক্ষর একই রকম হতে হবে। বি.ও একাউন্টের বার্ষিক মেইনটেন্যান্স ফী ৩০০ টাকা। এই ফী প্রতি বার হিসাব বছর শুরু হওয়ার আগেই পরিশোধ করতে হয়। বি.ও একাউন্টের ক্ষেত্রে হিসাব বছর ধরা হয় ১লা অক্টোবর থেকে পরের বছরের ৩০শে সেপ্টেম্বর।
ডিভিডেন্ড (Dividend):

কোনো কোম্পানির উপর অর্পিত আয়কর বাদ দিয়ে যে লাভ থাকে তা থেকে যে অংশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় তাকে ডিভিডেন্ড বলে। ডিভিডেন্ড সাধারণত মূলধনের উপর শতকরা হারে বা শেয়ার প্রতি টাকা হিসাবে দেয়া হয়। ডিভিডেন্ড হার শেয়ারের ফেইস ভ্যালুর উপর হিসাব করা হয়। ডিভিডেন্ড নগদ টাকা না দিয়ে নতুন শেয়ার আকারে দিলে তাকে স্টক ডিভিডেন্ড বা বোনাস শেয়ার বলে। কোনো ব্যক্তি ১০০ টাকার ফেইস ভ্যালুর শেয়ার ২০০ টাকা দিয়ে কিনলে তিনি ডিভিডেন্ড পাবেন ১০০ টাকার উপর। প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকায় কোনো না কোনো কোম্পানির ডিভিডেন্ড হার ঘোষণা থাকে।
বোনাস শেয়ার (Bonus Share):

কোম্পানির মুনাফা হলে তার থেকে শেয়ার হোল্ডারদেরকে ডিভিডেন্ড দেয়া হয়। ভালো কোম্পানি সবসময় ভালো ডিভিডেন্ড দেয়ার চেষ্টা করে। গ্রোয়িং কোম্পানির মুনাফার টাকা সাধারণত কলকব্জা, দালান-কোটা বা ইনভেন্টরিতে বিনিয়োগ হয়ে যায়। কোম্পানি যদি মনে করে বিনিয়োগ ব্যাহত করা যাবে না, এমতাবস্থায় শেয়ার হোল্ডারদেরকে নগত ডিভিডেন্ড না দিয়ে সমপরিমাণ টাকার শেয়ার দিলে তাকে বোনাস শেয়ার বলে। নগত ডিভিডেন্ড দিলে কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ কমে যায়। কিন্তু বোনাস শেয়ার দিলে কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ ঠিক থাকে। যদিও ভবিষ্যতে ডিভিডেন্ড দায় বেড়ে যাবে। ক্যাশ ডিভিডেন্ড থেকে বোনাস শেয়ার দেয়ার সম্ভাবনা থাকলে শেয়ারের দাম বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারী বোনাস শেয়ার বিক্রি করে নগত টাকা পেতে পারে।
রাইট শেয়ার (Right Share):

কোনো কোম্পানির অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হলে সে তা প্রথম শেয়ার হোল্ডারদেরকে দেয়ার ঘোষণা দিতে হবে। এই ঘোষণাকে রাইট শেয়ার অফার বলে। রাইট শেয়ারের মূল্য মূল শেয়ারের ফেইস ভ্যালু এর সমান বা বেশি হতে পারে। প্রায় ক্ষেত্রে রাইট শেয়ারের মূল্য বাজার মূল্য থেকে কম হয়। সে কারণে রাইট শেয়ার ঘোষণার সম্ভাবনা দেখা দিলে ঐ শেয়ারের বাজার মূল্য বেড়ে যায়। রাইট শেয়ারের অনুপাত ২: ১০। অর্থাৎ কারো কাছে ১০টি শেয়ার থাকলে তিনি ২টি শেয়ার রাইট পাবেন।
মার্কেট লট (Market Lot):

শেয়ার বাজারে শেয়ারের ক্রয় বিক্রয়ের ন্যূনতম সংখ্যাকে মার্কেট লট বলে। এর কমে সাধারণত ক্রয় বিক্রয় হবে না। যেমন কেয়া ডিটারজেন্ট এর লট ৫০০টি, রুপালি ব্যাংকের লট ১০টি, এইমস এর লট ২৫০০টি, এবি ব্যাংকার লট ৫টি। শেয়ারের সংখ্যা মার্কেট লট থেকে কম হলে তাকে অড লট বলে। অড লট শেয়ার আলাদাভাবে ক্রয় বিক্রয় করতে হয়। অড লট শেয়ার কেনার ভালো সময় হলো এজিএম (AGM-Annual General Meeting) এর পরের দিনগুলোতে এবং বুক ক্লোজার বা রেকর্ড ডেট এর ৫/৭ দিন আগে বিক্রয় করলে ভালো লাভবান হওয়া যায়।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে কিভাবে পুঁজি বৃদ্ধি পায়:
সাধারণত সকল ব্যবসায় লাভবান হওয়া যায় ক্রয় বিক্রয়ের পার্থক্য থেকে। কিন্তু শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে কয়েক ভাবেই লাভবান হওয়া যায়। যথা:
ক) নগত ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির মাধ্যমে লাভ।
খ) বোনাস শেয়ার প্রাপ্তির মাধ্যমে লাভ।
গ) রাইট শেয়ার প্রাপ্তির মাধ্যমে লাভ।
ঘ) মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে মূলধনী লাভ।
উ) মূল্যের ওঠা-নামার সুযোগ গ্রহণ করে লাভ।
Share Market Related Abbreviations:

SEC - Securities and Exchange Commission
CDBL - Central Depository of Bangladesh Ltd
DSE - Dhaka Stock Exchange
CSE - Chittagong Stock Exchange
IPO - Initial Public Offering
BO A/c - Beneficiary Owners Account
NRB - Non-Resident Bangladeshi
X-Dividend - Price Without Dividend
Cum Market - Price With Dividend
Demat - Dematerialization
MF - Mutual Fund
PLC - Public Limited Company
DP - Depository Participant
EPS - Earning Per Share
AGM - Annual General Meeting
EGM - Extra Ordinary General Meeting
Team - Together Everyone achieves More
CEO - Chief Executive Officer
B - Bonus Share
R - Right Share
##############
Written by Muhammad Mohiuddin (Shishir)
LLB, MBA